টিআর/জিআর/কাবিখা ইত্যাদি প্রকল্প সহ সরকার ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে পুকুর চুরি অনিয়ম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ত্রাণ কর্মসূচি-২ অধিশাখা, বাংলাদেশ সচিকালয়, ঢাকা দপ্তর এর প্রকল্প হচ্ছে (টিআর/জিআর/কাবিখা ইত্যাদি প্রকল্প)।
গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর-খাদ্যশস্য/নগদ টাকা) প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলোঃ
কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলেও উপরোক্ত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে আমাদের সমাজে দেখা যায় না।
আমাদের সমাজে যখন গরিব দুস্থ লোকজন কাজ পায়না বা অসহায়ের মধ্যে জীবনযাপন করে তখন সরকারের এসব প্রকল্পের কারনে গরীব জনগণের বেঁচে থাকার জন্য একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ গরীব, অসহায়, দুস্থ ব্যক্তিদের পেটে লাথি মেরে সরকারের এসব প্রকল্পের অর্থ পুকুর চুরি করে আসছে। কয়েকটি পুকুর চুরির দৃশ্য নিম্নরুপঃ
সরকারি অর্থ লুটপাটের প্রকল্প হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও কর্মসৃজন প্রকল্প। গরিব খেটে খাওয়া মানুষের হাতে যখন কাজ থাকে না, সেই দুঃসময়ে তাদের কাজের সংস্থান এবং গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নের যূথবদ্ধ উদ্দেশ্য নিয়ে দৃশ্যত এসব প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। উদ্দেশ্য যত মহৎ হোক না কেন, বাস্তবে এগুলোকে লুটপাটের প্রকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন গ্রামাঞ্চলের টাউট রাজনৈতিক কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় প্রশাসনও সোৎসাহে এ লুটপাটের ভাগিদার হয়। গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের দুর্দশা লাঘবে সরকারের টিআর (টেস্ট রিলিফ), কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) কর্মসূচিতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় সে অর্থের অর্ধেকই চলে যায় প্রভাবশালীদের পেটে। যাদের জন্য প্রকল্প বরাদ্দ করা হচ্ছে তাদের উন্নয়ন না হয়ে উন্নয়ন হয় যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে সেই দলের টাউট নেতা ও স্থানীয় কিছু অসাধু সরকারি কর্মকর্তার। নানা কৌশলে প্রশাসনের যোগসাজশেই যে এ লুটপাট চলে তা ওপেন সিক্রেট। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে ‘আকাশ-বাতাস’ নামে একটি সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের মূল হোতা এক প্রভাবশালী ব্যক্তির এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় তার দাপটে তটস্থ থাকেন মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা। এমপিদের ভুয়া ডিও দিয়েও এ চক্রের সদস্যরা কোটি কোটি টাকার প্রকল্প হাতিয়ে নিচ্ছেন, যা অনেকটাই ওপেন সিক্রেট। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ এ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন আর্থিক বিষয়ে ৫ হাজারের বেশি অডিট আপত্তি রয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রংপুর বিভাগে অডিট আপত্তির সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামেও চলছে লুটপাটের মহোৎসব। এসব প্রকল্প যে লুটপাটের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহূত হয় তা জানা সত্ত্বেও সংসদ সদস্যরা বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চুপ। এলাকার রাজনৈতিক কর্মীদের কিছু পাইয়ে দেওয়ার উদার মনোভাবে তারা সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকার অপচয় রোধ করার স্বার্থেই টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও কর্মসৃজন প্রকল্পের অবসান ঘটানো দরকার। গরিব মানুষের উন্নয়নের বদলে সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা এবং গ্রামাঞ্চলের টাউট রাজনৈতিক কর্মীদের ভাগ্যোন্নয়ন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এখন দেখি এসব প্রকল্পে কিরুপ বরাদ্দ রাখা হয়ঃ
আমরা যদি গ্রামাঞ্চলের জনগণ সচেতন না হই তবে এভাবেই গরীবদের হক মেরে বিলাসিতা করতে চােইবে প্রভাবশালীরা।